জীবনের অর্থ খুঁজে পাওয়া যায় তখন,যখন এই জীবন আরেকটি জীবনকে সুস্থভাবে বাঁচিয়ে রাখার লড়াইয়ে সফল হয়। আর নার্সরা সর্বদা সেই লড়াইয়ের ময়দানে দিনরাত লড়াই করে যায় সফল হবে বলে। একটি জরাজীর্ণ দেহে,মমতার প্রলেপ দিয়ে তাতে চাঞ্চল্যতা ফেরাতে তারা ব্যাকুল হয়ে যায়। রাত জেগে রোগীর শিয়রে বসে তাকে সেবা প্রদানের সমস্ত কষ্ট নিমিষেই চলে যায় যখন তার মুখে সুস্থতার হাসির রেখা ভেসে ওঠে। এটাই তো চায়, এটাই তো মূখ্য উদ্দেশ্য তাদের; একটা নিরস দেহে রস প্রতিষ্ঠা করা,তার মুখে ভেসে ওঠা হাসির রেখার কারণ হওয়া।
নির্ঘুম রাত আর ব্যস্ততম দিনেরা হেরে যায় রোগীর অম্লান চেহারার কাছে। অন্যের খুশির কারণ হওয়া চারটেখানেক কথা নয় যে! এ তো পুরো বিশ্বকে জয় করার সমান বিষয়।
যখন একজন রোগীর পাশে তার পরিবারের লোকগুলো,তার কাছের লোকগুলো,তার আপনজনগুলো থাকতে পারে না তখন নার্সরাই পাশে থাকে তাদের ভরসা হয়ে। তাদের সাহস জোগায়,নিজেকে ভালোবাসতে শেখায়,বেঁচে থাকার স্পৃহা জন্মাতে সাহায্য করে। তাদের জীবনের উৎফুল্লতা ফেরাতে নিজের ক্লান্তির কথা ভুলে যায়। এর বিনিময়ে যখন তাকে প্রাণভরে দো’আ করে দেওয়া হয় তখন সে নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী,সবচেয়ে সফল একজন ভেবে নিতে এতটুকুও দেরি করে না।
তবে চিত্রে মাঝেমধ্যে ভিন্নতাও দেখা দেয়। অনেকের উগ্র আচরণ একজন নার্সের মনকে ব্যথিতও করে দেয় অনেক সময়। এর পরেও তারা সেবা প্রদানে পিছপা হন না। সমস্ত অনমনীয় আচরণকে পেছনে ফেলে তারা নিরলস লড়াই করে যায় নিস্তেজ একটি দেহে হাসি ফোটাবে বলে।
একজন নার্সকে বেশিরভাগ সময়টাই নিজের পরিবারের থেকে দূরে থাকতে হয় হসপিটালে থাকা তার আরেক পরিবারের সদস্যগুলোকে সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনার জন্য। হ্যাঁ, একজন নার্স কারো মেয়ে,কারো বোন কারো মায়ের মতো করেই যত্ন করে সুস্থ করতে চায় একজন রোগীকে। রোগীরা যখন তাকে পরম মমতা ভরে “মা,বোন বা মেয়ে” বলে সম্বোধন করে তখন সেটা তার মর্মদেশ স্পর্শ করে।কিছুক্ষণের জন্য সে ভুলে যায় তার প্রফেশনের কথা। তার মনে হয়,সে নিজের প্রিয়জনদেরই সেবা করছে।
প্রিয় সকল,তোমাদের সেবার জন্যই নিয়োজিত নার্সরা,নিয়োজিত মানবতার সেবায়। সেবা দিয়ে জয় করে নেবে তোমাদের ভালোবাসা আর বিনিময়ে চাইবে এক গাল ভরা প্রাণ খোলা হাসি।