পৃথীবির সবচেয়ে সহজ,চিরন্তন সত্য বলে যদি কিছু থাকে,সেটা আমার মৃত্যুকেই মনে হয়।জন্ম হলেই মরতে হবে এটা যেমন সত্য তেমনি সেই জন্ম মৃত্যু যে একমাত্র ও শুধুমাত্র সৃষ্টিকর্তার হাতে সেটাও সত্য।নিজেকে নিজে মৃত্যু দেওয়ার অধিকার কারোই নেই।সেই অধিকার যদি পেতে চাও তাহলে আগে তোমাকে জিবন দেওয়া শিখতে হবে,যা কখনো মানুষের দ্বারা সম্ভব নয়।
এইতো কিছু দিন আগে বলিউডের নায়ক সুশান্ত সুসাইড করলো।বেশ লেখালেখি হলো।ফেসবুকে কয়েকদিন ধরে শোক পালন চললো।তারপর!!যা হবার তাই সবাই ভুলে গেলো।
আজকে হঠাৎ এসব নিয়ে ভাবতাম না যদি না খবর পেতাম যে নীলফামারী নার্সিং ইনিস্টিটিউট এর এক মেয়ে প্রেম জনিত কারনে সুসাইড করেছে।কত গভীর ভালোবাসা।কত ঘুম জাগা রাতে সপ্ন সাজিয়েছিলো মেয়েটা তার ভালোবাসার মানুষ টিকে ঘিরে।ঘর বাধবে দুজন মিলে।সব সপ্ন আজ মাটির নিচে চাপা পড়ে যাবে!!
এইতো কয়েক বছর আগের কথা,আমাদের পাশের গ্রামের ছেলেটা আমার বয়সী ছিলো।শহরের স্কুলে পড়তে সম্ভবত ক্লাস নাইন কি টেনে হবে।বাবার যথেষ্ট টাকা ছিলো।ছেলের আবদার তার এপ্যাসি বাইক চাই।বাবা ধমকের সুড়ে বলেছিলো,তুই বাইক কি করবি??
ব্যাস অভিমান করে বিষ খেয়েছিল।এখন বাশ ঝাড়ে শুয়ে আছে,বাবার সপ্ন ও নিজের অপূর্ণ সপ্নগুলো নিয়ে!!
আমাদের এই প্রজন্ম এতো অভিমানী কেনো?
জীবনকে এতো সহজভাবে নিচ্ছে যেনো এটা বালু দিয়ে বানানো খেলা ঘর।ইচ্ছে হলে খেললো অভিমান হলো ভেঙ্গে দিয়ে ওপাড়ে চলে গেলো।
আথচ জীবন তো এতো সহজ নয় যে একটা এ্যাপাসি দিয়ে জীবন কেনা যায়।
জীবন মানেই লড়াই করে বেচে থাকা।যে যত বেশি স্ট্রাগল করতে পারবে,পৃথীবিতে তার পায়ের তলের মাটি ততই শক্ত হবে।
তুমি মরে গেলে কার কি এসে যায়।তোমার হাতে লাগানো গাছটা আমৃত্যু ফুল ফল দিয়ে যাবে।যে দোকানের চা না খেলে তোমার বিকেলটা শুদ্ধ হতো না।তুমি মরে গেলেও সে দোকানে আড্ডা বসবে।চুলায় আগুন জ্বলবে,কেতলি থেকে নামবে ধোয়া ওঠা গরম চা!!
ধীরে ধীরে সবাই ভূলে যাবে শুধু দুজন মানুষ বাদে।সেটা তোমার বাবা মা।তোমাকে ঘিরে যাদের সব সপ্ন ছিলো,যাকে আকড়ে ধরে তারা বাচঁতে চেয়েছিলো তাকে তারা কি করে ভূলবে।
অথচ তুমি কত বড় অকৃতজ্ঞ ভাবতে পারো??
যারা কিনা তোমার অসহায় সময়ে তোমার পাশে ছিলো।তুমি চলতে পারতে না,খেতে পারতে না।বুকে ধরে, রক্ত দিয়ে তিল তিল করে মানুষ বানালেন সেই তুমি কিনা তাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করলে!!প্রেমিক প্রেমিকার মিথ্যে ভালোবাসাই কি তোমার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠলো। বাবা মায়ের ভালোবাসা কিছুই না। কি ভেবেছো বাবা মা কে কাদিয়ে ওপাড়ে ভালো থাকবে??
বাবা মা দয়ালু তাই তোমাদের মতো বিশ্বাসঘাতকতকে ক্ষমা করে দিয়েছে !!
কিন্তু সৃষ্টিকর্তার কাছ ঠিকই বাবা মায়ের চোখের জ্বলের হিসাব দিতে হবে তোমাকে।
এম আর মেহেদী।
রংপুর নার্সিং কলেজ, রংপুর।